তাফসীর বিভাগ পরিচিতি

তাফসীর বিভাগ পরিচিতি

                                                                 তাফসীর বিভাগ পরিচিতি
কুরআনে কারীম আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বাণী। সর্বশেষ আসমানী কিতাব। মানুষের পথ-নির্দেশক সকল উলূম ও মা’আরিফ তথা জ্ঞান-বিজ্ঞানের উৎস ও আঁধার। তৃষিত হৃদয়ের অমৃত সুধা। খোদাপ্রেমে পাগলদের প্রেমাগ্নি নিবারণের প্রিয় শারাবান তাহূরা। আল্লাহ্ নিজেই তার এই মহান বাণীকে রূহ ও নূর অভিধায় অভিষিক্ত করেছেন। রূহ দ্বারা যেমন জীবনের চাকা ঘোরে, চাঞ্চল্য ও কর্মক্ষমতা আসে, তেমনি কুরআন দ্বারা জীবনের চাকা সঠিক পথে পরিচালিত হয়। এর অবর্তমানে মানুষ নির্জীব লাশে পরিণত হয়। এর সঙ্গে যে কোন শোগল, নিমগ্নতা, তিলাওয়াত, তরজমা ও তাফসীর পাঠ মানুষের অন্তরাত্মাকে করে আলোকিত। কিয়ামত ও পুলসিরাতের ঘনান্ধকারে আলো পেতে হলে এখনই কুরআনের আলো দিয়ে হৃদয় ভরতে হবে। কুরআনে কারীমের তিলাওয়াত, অনুধাবন ও হৃদয়ঙ্গম সবই আপন-আপন জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ। তবে অনুধাবনের পর তিলাওয়াতে যে স্বাদ ও তৃপ্তি মিলে তা বর্ণনা করে বুঝাবার মতো নয়। এর সঙ্গে যদি আল্লাহর সাথে ইশ্ক ও প্রেমের সর্ম্পক থাকে তবে তো সোনায় সোহাগা। এবং কুরআন মাজীদই সেই গ্রন্থ, হাজারও বছর যাবৎ যা দুনিয়ার সর্বাপেক্ষা বেশি সংখ্যক মানুষের আত্মায় প্রাণরস জুগিয়ে আসছে। এত বেশি লোক হাররোজ হারদম ভক্তিরসে আপ্লুত হয়ে এ গ্রন্থ পড়ছে। এর তত্ত্ব-তথ্যে জ্ঞান-পিপাসা নিবারণ করছে। আলোয় জীবন বদলাচ্ছে ও জীবন গড়ছে। যার তুলনা অন্য কোনো কিতাব ও অন্য কোন গ্রন্থে পাওয়া যাবে না। কুরআনে কারীমের তেলাওয়াত, তরজমা ও তাফসীরের তা’লীম দেওয়ার জন্য বিশ্বব্যাপি গড়ে উঠেছে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিশেষ করে কুরআন রিসার্চ করার জন্য বিভিন্ন স্থানে চালু করা হয়েছে উচ্চতর তাফসীর গবেষণা বিভাগ।
    একবিংশ শতাব্দীর বাংলার মানুষের মাঝে কুরআনের সঠিক জ্ঞান পৌঁছানো ও তাফসীর প্রেমিক তালিবে ইলমের পিপাসা নিবারণের লক্ষ্যে ১৪৩৬ হিজরী মোতাবেক ২০১৫ ঈসায়ী সনে ‘‘জামিয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়া নানুপুরে’’ উচ্চতর তাফসীর গবেষণা বিভাগ চালু করা হয়। সূচনাকাল থেকে এ যাবৎ ধারাবাহিকভাবে খিদমত আঞ্জাম দিয়ে আসছে। এ বিভাগে তৈরি হচ্ছে প্রতি বছর কুরআনের সঠিক র্মম অনুধাবনকারী একদল মুফাসসীরে কুরআন।
উক্ত বিভাগের কার্যক্রম ও বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপ:
১. সুদক্ষ মুফাসসিরীনে কেরাম দ্বারা পাঠদান।
২. উসূলুত্ তরজমার আলোকে কুরআনের তরজমা বোঝার যোগ্যতা অর্জন।
৩. বালাগাত তথা অলংকার শাস্ত্রের সঙ্গে মিল রেখে কুরআনের অর্থ বোঝার যোগ্যতা অর্জন।
৪. উসূলুত তাফসীর ও উলূমুল কুরআনের উপর বিশেষ পাঠদান।
৫. আহকামুল কুরআনের উপর বিশেষ পাঠাদান।
৬. ইসরাঈলী বর্ণনার উপর বিশেষ পাঠদান।
৭. উসূলুল হাদীস এবং উসূলুত তাখরীজ এর উপর পাঠদান।
৮. উসূলুল ফিক্বহের উপর বিশেষ জ্ঞানার্জন।
৯. তারাজিমুল মুফাসসিরীনের উপর বিশেষ জ্ঞান অর্জন।
১০. এ’রাবুল কুরআনের উপর জ্ঞানার্জন।
১১. তা’আরুফুল কুতুবের উপর বিশেষ পাঠদান।
১২. কাওয়াইদুল ইমলা এবং আলামাতুত তারকীম এর উপর বিশেষ পাঠদান।
১৩. শিক্ষকদের নিয়মিত তত্ত্ববধান।
১৪. সাপ্তাহিক পরীক্ষার মাধ্যমে পড়া-লেখার মানোন্নয়ন যাচাই।
১৫. প্রতিদিন প্রতিটি ক্লাসের সবক গুরুত্বের সাথে আদায় করা।
১৬. সাপ্তাহিক, পাক্ষীক ও মাসিক সেমিনারের আয়োজন করা।
১৭. নির্বাচিত বিষয়ের উপর গবেষণামূলক একটি থিসিস (বৃহত্তর গবেষণাপত্র) তৈরি করা।
১৮. কুরআন সুন্নাহ্ অনুযায়ী আমলের প্রতি যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করা।
বিভাগের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    জ্ঞান-পিপাসু মুসলিম সন্তানদের কুরআন সুন্নাহ্ তথা ইলমে ওহীর শিক্ষায় শিক্ষিত করে পৃথিবীতে একদল যোগ্য, সংশয়হীন আল্লাহ’ওয়ালা তৈরি করা। পাশাপাশি সালফে সালেহীনের নীতিতে দৃঢ়তা অর্জন করা এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের আক্বীদা বিশ্বাস অনুযায়ী তাফসীর, হাদীস ও ফিক্বহের সংরক্ষণ করা এবং আল্লাহ তা‘য়ালার হুকুমকে সমুন্নত রাখা ও তার সন্তষ্টি অর্জন করাই এ বিভাগের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

arrow_upward