জামিয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়া নানুপুর-এর অন্যতম বিভাগ
উচ্চতর তাজবীদ ও ক্বিরাআত বিভাগের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও বৈশিষ্ট্য
আল্লাহ তা’য়ালা ইরশাদ করেন, ‘‘তোমার কুরআন তিলাওয়াত করো তারতীলের সাথে’’।
হযরত আলী রাযি. তারতীলের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, তোমরা কুরআনকে তিলাওয়াত কর তাজবীদের সাথে।
অপর এক আয়াতে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন: “আমি যাদেরকে কিতাব দান করেছি তাদের মাঝে যারা এর হক্ব আদায় করে তিলাওয়াত করে, তারাই তাকে বিশ^াস করে। আর যারা কুফরী করে (হক্ব আদায় করে তিলাওয়াত করে না) তারাই ক্ষতিগ্রন্থ।
রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, “বহু লোক কুরআনকে এমন করে তিলাওয়াত করে (তাজবীদের বিপরীত) যে কুরআন তাদেরকে লা’নত করে”।
আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী রহ. তার লিখিত কিতাব আল মানহুল ফিকরিয়্যাহ এর মাঝে উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যায় বলেন, একথার উপরে কোন মতানৈক্য নেই যে, তাজবীদের কাওয়ায়েদ শিখা ফরযে কিফায়া এবং তার উপরে আমল করা অর্থাৎ তাজবীদের ক্বাওয়ায়েদ জানা ছাড়াই ছহীহভাবে তিলাওয়াত করা ফরযে আইন।
মোল্লা আলী ক্বারী রহ. এর উক্ত উক্তিটি প্রমাণ করে যে, তাজবীদ শিক্ষা করা ফরযে কিফায়া হওয়ায় বিষয়টি কুরআন হাদীসের পাশা-পাশি ফুক্বাহায়ে কিরামদের ইজমা দ্বারাও প্রমাণিত।
ইমাম জাযরী রহ. তার কিতাব আল মুকাদ্দামাতুল জাযরিয়্যাহ এর মধ্যে বলেন, “কুরআন মাজিদকে তাজবীদ সহ তিলাওয়াত করা আবশ্যক আর যে ব্যক্তি কুরআনকে তাজবীদসহ মুতাবেক তিলাওয়াত করে না সে গুনাহগার।
প্রকৃত মুসলমান আর বাস্তব দায়ী ইলাল্লাহ হওয়ার জন্য সর্ব প্রথম র্শত হল, কুরআন কারীমের বিশুদ্ধ তিলাওয়াত জানতে হবে। কেননা বিশুদ্ধ তিলাওয়াত ব্যতীত নামাযই ছহীহ হয় না। সাধারণ মুসলমান বিশেষত উলামায়ে কিরামদের জন্যে বিশুদ্ধ কুরআন তিলাওয়াত করার সক্ষমতা অর্জন করা আবশ্যক। এ অপরিহার্য প্রয়োজনিয়তাকে সামনে রেখেই জামিয়া ইসলামিয়া ওবাইদিয়া উচ্চতর তাজবীদ ও কিরাত বিভাগ যথাযথ গুরুত্বের সাথে চালু আছে।
উক্ত বিভাগের কার্যক্রম ও বৈশিষ্ট্য:
১. স্বল্প সময়ে তাজবীদের সকল ক্বাওয়ায়েদ আয়ত্ত কারানো।
২. তাজবীদের ক্বাওয়ায়েদ মোতাবেক হরফের সঠিক উচ্চারণের পারদর্শী করে তুলতে নতুন পদ্ধতি অবলম্বন।
৩. রেওয়ায়েতে হাফস্ ইমাম আছেম ইবনে আবিন নুজূদ (আশা-শাত্ববিয়্যাহ্ মা’আল জাযারিয়্যাহ্)-এর সমস্ত মাসআলাহ্ পাঠদানের ব্যবস্থা।
৪. প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে তাজবীদ-এর কাওয়ায়েদ মোতাবেক তিলাওয়াত শিখার সুব্যবস্থা।
৫. সুন্দর লাহজায় ও দীর্ঘ শ^াসে তিলাওয়াত শিখার বিশেষ প্রশিক্ষণ।
৬. মেধা ও কন্ঠ যাচাইয়ের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে কোন কিরাত প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণের যোগ্যতা অর্জনে বিশেষ মেহনত।
৭. ইলমে ক্বিরাতের প্রসার ও মশকের প্রতি আগ্রহী করার লক্ষ্যে সমসাময়িক সেমিনারের আয়োজন।
৮. তিলাওয়াতের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এবং তিলাওয়াত আন্তর্জাতিক মানোন্নয়নে শরিয়াহ্ মোতাবেক যুগোপযোগী আধুনিক প্রযুক্তি তথা সাউন্ড সিস্টেমের মাধ্যমে মাশ্কের ব্যবস্থা।
৯. প্রত্যেক ছাত্রকে তারতীল, তাদবীর, ও হাদর-সহ সকল স্তরের তিলাওয়াতে পরদর্শী করে গড়ে তোলা।